হবিগঞ্জ, ১১ ডিসেম্বর : সদ্য যোগদানকৃত জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিনের সঙ্গে পরিবেশ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ সাক্ষাৎ করে পরিবেশ বিপর্যয়ে জর্জরিত হবিগঞ্জের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেছেন। গতকাল (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এই সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জের সভাপতি অধ্যাপক মো. ইকরামুল ওয়াদুদ, ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’–এর উপদেষ্টা ও বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াছ বখত চৌধুরী, ‘ধরা’র আহ্বায়ক তাহমিনা বেগম গিনি, বাপা হবিগঞ্জের সহসভাপতি ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী মমিন, খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল এবং পরিবেশকর্মী তাহমিনা বেগম।
সাক্ষাৎকালে নেতৃবৃন্দ শহরের পুরাতন খোয়াই নদী ও খোয়াই নদীর দখল–দূষণ, পুকুর-জলাশয় বিলুপ্তি, পাহাড়-টিলা কাটা, বালু উত্তোলন, শিল্পদূষণে বিপর্যস্ত সুতাং নদীসহ জেলার পরিবেশগত অবক্ষয়ের সার্বিক চিত্র জেলা প্রশাসকের সামনে তুলে ধরেন। পরিবেশ রক্ষায় জরুরি ও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানান তারা।
জেলা প্রশাসক মনোযোগ সহকারে তাদের বক্তব্য শোনেন এবং পরিবেশ রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন। এ সময় শহরের পুরাতন খোয়াই নদী দখলমুক্ত করে স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করার দাবিতে জেলা প্রশাসকের হাতে একটি স্মারকলিপি তুলে দেওয়া হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, পুরাতন খোয়াই নদী হবিগঞ্জ শহরের প্রধান জলধারার ভূমিকা পালন করে আসছে। ভূগর্ভস্থ পানির ভারসাম্য রক্ষা, বৃষ্টির পানি ও নিকাশি ব্যবস্থার প্রধান নির্ভরস্থল এবং শহরের পরিবেশগত স্থিতিশীলতার অন্যতম ভিত্তি এই নদী। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ভূমিখেকো চক্রের দখল, ভরাট ও দূষণের ফলে নদীটি আজ অস্তিত্ব সংকটে।
পরিবেশবাদী সংগঠন ও নাগরিক সমাজ প্রায় দুই দশক ধরে নদী দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছে। ২০১৯ সালে প্রশাসন নদীর একটি অংশে উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তা পরে পুনরায় দখল হয়ে যায়। বর্তমানে নদীর দুই তীরে নতুন নতুন স্থাপনা গড়ে উঠছে এবং দখল–দূষণ অব্যাহত রয়েছে।
নদীর মাছুলিয়া এলাকা থেকে পুরানবাজারের মাছবাজার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার অংশে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ সীমানা নির্ধারণ, স্থায়ী সীমানা পিলার স্থাপন, সব ধরনের অবৈধ স্থাপনা অপসারণ, নদী খনন এবং দুই পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণের দাবি জানানো হয় স্মারকলিপিতে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan

নিজস্ব প্রতিনিধি :